ক্রিয়া আগেই সম্পন্ন হয়েছে, তার কালকে অতীত কাল বলে। যেমন:
আমি তাকে দেখেছিলাম।
গতকাল ঢাকা গিয়েছিলাম।
মা রান্না করছিলেন।
অতীত কালের প্রকারভেদ :-
অতীত কালকে চারভাগে ভাগ করা যায়।
যেমন -
১.নিত্য-অতীত;
২. ঘটমান অতীত;
৩. পুরাঘটিত অতীত এবং
৪. নিত্যবৃত্ত-অতীত।
নিত্য বা সাধারণ অতীত :-
সাধারণভাবে যে-ক্রিয়ার কাজ পূর্বে অর্থাৎ, অতীতে সম্পূর্ণ হয়েছে তার কালকে বলা হয় নিত্য-অতীত। এতে নির্দিষ্ট কোনো সময়ের উল্লেখ থাকে না। তবে বাক্য থেকে বুঝা যায় যে, এই শ্রেণির কাজ খুব বেশি পূর্বে নিষ্পন্ন হয়নি।
এই কাল বুঝাতে ধাতুর শেষে-ইলাম (লাম), ইলে (লে), ল প্রভৃতি ক্রিয়া-বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন :
হেনা গান গাহিল (গাইল)।
আমি একটি গল্প লিখিলাম (লিখলাম)।
বাবা বাজার হইতে (থেকে) আসিলেন (এলেন)।
নিত্যবৃত্ত অতীত :
পূর্বে যে ক্রিয়ার কাজ কিছুকাল ধরে চলত বা নিয়মিত ভাবে যে ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হত, তার কালকে বলা হয় নিত্যবৃত্ত অতীত।
এই কাল বুঝাতে ধাতুর শেষে-ইত (-ত), ইতাম (-তাম), ইতে (-তে) ইত্যাদি ক্রিয়া-বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমনঃ
প্রত্যহ সকালে হেনা সঙ্গীতচর্চা করিত (রোজ সকালে হেনা গানের রেওয়াজ করত)।
আমি যখন ঘুম হইতে উঠিতাম (আমি যখন ঘুম থেকে উঠতাম)।
বাবা তখন প্রাতর্জ সারিয়া বাড়িতে ফিরিতেন।
ঘটমান অতীত কাকে বলে :-
পূর্বে যে-ক্রিয়ার কাজ হচ্ছিল এবং তখনও যা সম্পূর্ণ হয়নি, তার কালকে বলা হয় ঘটমান অতীত।
এই কাল বুঝাতে ধাতুর শেষে- ইতেছিলাম (ছিলাম), -ইতেছিলে (ছিলে). ইতেছিল (ছিল) ইত্যাদি ক্রিয়া-বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন :
হেনা গান গাহিতেছিল (গাইছিল, গাচ্ছিল)।
আমি একটি গল্প লিখিতেছিলাম (লিখছিলাম)।
বাবা বাজার হইতে (থেকে) আসিতেছিলেন (আসছিলেন)।
পুরাঘটিত-অতীত :
অনেক পূর্বেই যে ক্রিয়ার কাজ ঘটেছিল, তাকে বলা হয় পুরাঘটিত-অতীত।
এই ঝাল বুঝাতে ধাতুর শেষে ইয়াছিল (এছিল), ইয়াছিলাম (এছিলাম), ইয়াছিলে (-এছিলে) ইত্যাদি ক্রিয়া-বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন :
হেনা গান গাহিয়াছিল (গেয়েছিল)।
আমি একটি গল্প লিখিয়াছিলাম (লিখেছিলাম)।
তখন বাবা বাজার থেকে আসিয়াছিলেন (এসেছিলেন)।